মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

২০২৪–২৫ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতে কর্পোরেট বিনিয়োগের ঘোষণা হয়েছে গত কুড়ি বছরে সবচেয়ে কম, যার অর্থমূল্য ৪৪,৩০০ কোটি টাকা!‌

বাণিজ্য | CORPORATE INVESTMENT: কর্পোরেট বিনিয়োগের ঘটনা বিগত ২০ বছরে সবথেকে কম

Sumit | ১১ জুলাই ২০২৪ ১২ : ৪১Sumit Chakraborty


সুশান্ত কুমার সান্যাল :
সম্প্রতি ব্যাঙ্ক অফ বরোদার ইআরডি বা ইকনমিক রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতে কর্পোরেট বিনিয়োগের ঘোষণা হয়েছে গত কুড়ি বছরে সবচেয়ে কম, যার অর্থমূল্য ৪৪,৩০০ কোটি টাকা!‌


কোভিড পরবর্তীতে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি বিশ্বের নজর কাড়ছে। এমনকি ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার সম্পর্কে যথেষ্ট আশাবাদী প্রায় সব আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থাগুলিও। তাহলে কী এমন হল, যার ফলে এই বিনিয়োগের ঘোষণা চলতি অর্থবর্ষে এতটা কমে গেল?‌ অনেকেই বলছেন, এর জন্য একমাত্র কারণ হল, দেশের সংসদীয় নির্বাচন।
প্রশ্নটা এখানেই, তাই যদি হয় তাহলে ২০১৪–১৫ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে কী করে সম্ভব হয়েছিল ২.৯০ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ?‌ আবার, ২০১৯–২০ অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে বিনিয়োগের পরিমানও তো ছিল ২.১০ লক্ষ কোটি টাকার আশেপাশে!‌ তাই শুধুমাত্র সংসদীয় নির্বাচনকে এর জন্য দায়ী করা যায় কি?


লক্ষ্য করা যায় যে, জুন মাসে সাধারণত এই বিনিয়োগের ঘোষণা কিছুটা কম থাকে। মার্চ নাগাদ এই বিনিয়োগের ঘোষণা বেশি হয়। কিন্তু মার্চ ২০২৪–এর ত্রৈমাসিকে কর্পোরেট বিনিয়োগের ঘোষণা ছিল ১২.৩৫ লক্ষ কোটি যেটা আবার তার আগের বার, অর্থাৎ মার্চ ২০২৩–এর ত্রৈমাসিকে প্রায় ১৬.২০ লক্ষ কোটি ছিল। অনেকে বলছেন, লগ্নি ঘোষণার এই ফারাক বেশ চোখে পড়ছে।


২০২৪–২৫ অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে বিনিয়োগের ঘোষণায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে উৎপাদন শিল্প, যেখানে রয়েছে মোট ঘোষিত লগ্নির প্রায় ৪৬ শতাংশ। এর পরে আছে বিদ্যুৎ (প্রায় ২৪ শতাংশ), অর্থনৈতিক ক্ষেত্র (‌প্রায় ২২ শতাংশ)‌ আর রিয়েল এস্টেট (‌৭.৯০ শতাংশ)‌। রিপোর্টে আরও জানা যাচ্ছে যে জুন, ২০২৩ ও জুন, ২০২৪–এর মধ্যে বিনিয়োগের আশ্বাস কমেছে প্রায় ৭.৪০ লক্ষ কোটির মত। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কমেছে পরিবহণ শিল্পে যা প্রায় ৬১ শতাংশ। কারণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে, দেশের বিমান সংস্থাগুলোর তরফে সাম্প্রতিক অতীতে নতুন এয়ারক্র‌্যাফট কেনার ঘোষণার কথা। ২০ শতাংশ কমেছে বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বিকল্পশক্তির ওপর গুরুত্ব বাড়ার কথা।


আবার সিএমআইই তথ্য অনুযায়ী কর্পোরেট বন্ডের ইস্যুর ক্ষেত্রেও একই ট্রেন্ড পরিলক্ষিত হচ্ছে দেশে। ২০২২–২৩–এর প্রথম ত্রৈমাসিকে এই প্রকার বন্ডের মোট মূল্য ছিল ১.৭৩ লক্ষ কোটি টাকা, যা ২০২৩–২৪–এর প্রথম ত্রৈমাসিকে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় ২.৮৬ লক্ষ কোটি টাকায়। কিন্তু ২০২৪–২৫ এর প্রথম তিন মাসে সেটা নেমে এসেছে প্রায় ১.৭৩ লক্ষ কোটিতে। এই হিসেবেও আশাহত হয়েছে অনেকেই।


অন্যদিকে, ব্যাঙ্ক অফ বরোদার রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যাঙ্কের দিকে থেকেও দেখা যাচ্ছে যে ২০২৪–এর মার্চের শেষ থেকে জুন পর্যন্ত ক্রেডিট এক্সপোজার বেড়েছিল ২.৭৮ লক্ষ কোটি যা গত বছরের একই সময়কালে ছিল প্রায় ৩.৭৮ লক্ষ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতির বাইরে বেরিয়ে আসতে হলে প্রথমেই নজরে থাকবে দেশের নতুন জাতীয় বাজেটের ওপর। সেখানে সরকার কী কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার।


কারণ, অর্থনৈতিক উন্নতিতে দেশে অনেক বেশি পরিমাণে কর্পোরেট বিনিয়োগ প্রয়োজন। পাশাপাশি আমাদের অবশ্যই চোখ রাখতে হবে এবারের বর্ষা এবং আগামী উৎসসবের দিনগুলোতে। একমাত্র এই দুটো ক্ষেত্র ঠিকঠাক থাকলে তবেই আভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়বে দেশের। ফলে জোয়ার আসবে কর্পোরেট জগতেও। কর্পোরেটের বিনিয়োগের আশাও বাড়বে। শুধুই সরকারি বিনিয়োগের জোরে ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী হওয়া মুশকিল।‌‌


#india



বিশেষ খবর

নানান খবর

শীঘ্রই আসছে...


সোশ্যাল মিডিয়া



07 24